Header Ads

  • তথ্যের কথা

    বই নিষিদ্ধের অশ্লীলতা আর অশ্লীলতার সংজ্ঞা

     ‘একটু উষ্ণাতার জন্য থেকে শুরু করে সৈয়দ শামসুল হকের খেলারাম খেলে যা ক্লাস নাইনের ওঠার আগে বাথরুমে বসে পড়ে ফেলেছি। নিষিদ্ধ বস্তুর প্রতি আমার আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি। ক্লাস নাইনে থাকতে আমি আরো যেসব বই পড়েছি, তার মধ্যে মুজতবা আলীর দেশে বিদেশে, হুমায়ূন আজাদের নারী, অস্ত্রভস্কির ইস্পাত ইত্যাদি উল্লেখ্যযোগ্য। আমি সর্বভূক, যা পেতাম,তাই পড়তাম। কিছু না পেলে ঠোঙ্গা খুলে পড়তাম। তো, এ অবস্থায় আমারে কেউ বলে দেয়নি, কোনটা অশ্লীল। আমি এত ধরনের বই পাঠ করেছি যে আমার বিবেক-বুদ্ধি-রুচি একটা পরিমিত ব্যালান্স রেখে তৈরি হয়ে যায় বলে আমি নিজেই প্রতৃক অশ্লীলতাকে চিহ্নিত করতে পেরেছি। ফলে একটা সময়, যা শুধু অশ্লীল, অর্থাৎ অশ্লীলতা ছাড়া যে বইটি আর কোনো সম্পদ নেই, তাকে আমি নিজেই অনায়াসে বর্জন করেছি। আমাকে আমার মা-বাবা-বড় বোন-ভাই-শিক্ষক কেউ না করে নাই যে এই বইটি পড় না।
    হুমায়ূন আজাদের পাক সার জমিন সাদ বাদ লেখার পর অশ্লীলতার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। নারীবইটি প্রকাশের পর অশ্লীলতার অভিযোগ তোলে হয়েছিলো এবং নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তসলিমা নাসরিনের ভ্রমর কইও গিয়া প্রকাশের পর অশ্লীলতার অভিযোগ তোলা হয়েছিল এবং বই তিনটি আমার পড়া সেরা বইগুলোর অন্যতম।
    যে অশ্লীলতাকে আপনার নির্ধারণ করেন, তা কোন দাড়িপাল্লায় তা আমার জানাতে হবে। কেননা, আপনার আমাকে মানা করছেন অশ্লীল বই পড়তে। কিন্ত আমি জানি না, আপনার অশ্লীলতার সংজ্ঞা আমার সংজ্ঞার সঙ্গে মেলে কী না। এবং আপনি আজ যা অশ্লীল বলছেন, কয়েক যুগ পর তা অশ্লীল নাও হতে পারে। কিংবা আজ যা আপনি রুদ্ধ করতে চাইছেন, সেই দ্বারা খুলে গেলে কোনো একদিন আপনাকেও দাড়াতে হতে পারে কাঠগড়ায়।
    জানি না, আপনারা কখন কী ভাবেন, আর কী চান। তবে আমরা, এই প্রজম্ম যারা মুক্তিবুদ্ধি আর আধুনিক সুস্থ সমাজের স্বপ্ন দেখি, আর লেখকের স্বাধীনতা চাই। আমরা সবকিছু পড়ে দেখে নিজেই যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিতে চাই, কোনটা রাখবো আর কোনটা বর্জন করবো। আমরা একটি সুন্দর বইমেলা চাই, যেখানে কখনো কোন নিষিদ্ধ আর স্টল বন্ধের মতো অশ্লীল ঘটনা ঘটবে না। 

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728