দুই বাংলার দুই বৈশাখ কেন?
বৈ
|
দিক যুগে বাংলা সনের প্রথম মাস ছিলো অগ্রহায়ণ। মোগল সম্রাট
আকবর ১৫৮৪ সালে বৈশাখ মাসকে বাংলাবর্ষের প্রথম ধরে বাংলা বর্ষপিঞ্জ প্রবর্তন করেন। বাংলার কৃষকরা চৈএমাসের শেষদিন পযর্ন্ত ভূ-স্বামীর খাজনা পরিশোধ করত। পরদিন নববর্ষে
ভূ-স্বামীরা তাদের মিষ্টিমুখ করাতেন। এ উপলক্ষে তখন মেলা এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন
করা হতো। তবে তখন মেলা ছিল জমিদার কেন্দ্রিক, প্রাসাদের অভ্যন্তরে। ধীরে ধীরে এটি বড়
ময়দানে সামাজিক উৎসব হয়ে উঠে।
১৯৬৭
সালের আগে বিপুল আয়োজনে পহেলা বৈশাখ পালনের রাতী তেমন জনপ্রিয় ছিল না। ’৭০ থেকে
৯০’র দর্শক পর্যন্ত পুরোদমে গ্রামীন মেলার আয়োজন ছিল। বর্তমানে ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প
সংস্থা, পর্যটন করপোরেশন, বাংলা একাডেমী এবং লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বৈশাখী
মেলা নতুন মাএা পেয়েছে। প্রায় পচিঁশ বছর আগে ১৯৮৯ সালে চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে
চালু হয় মঙ্গল শোভাযাএা। কালের পরিক্রমায় এটি রূপ নিয়েছে জাতীয় শোভাযাএায়। রাজা- রাণী,
রাক্ষস, হাতি, বাঘ, পেঁচা, খরগোশ ও টেপা পুতুলসহ দেশীয় মোটিফে তৈরি বিচিএ সব মুখোশ
থাকে শোভাযাএায়। এছাড়া মাছ, জোড়া পায়রা, ছাগল, কাকতাড়ুয়া, হরিণ, ঘোড়ার আদলে বানানো
হয় আমাদের লোকাচারের নানা কাঠামো। চারুকলাসহ নগরীরর বিভিন্ন সড়ক সেজে ওঠে বর্ণিল আলপনায়।
কিন্তু একটা বিষয় হয়তো অনেকেই জানেন না যে, পশ্চিমবঙ্গে যেদিন বাংলা নববর্ষ পালিত হয়
তার আগেই দিনই আমাদরে দেশে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হয়ে যায়। এর কারণ হলো- চন্দ্রসন হিজরীকে
সৌর গণনার হিসেবে আনার ফলে ইংরেজি ক্যালেন্ডারের সাথে বিভিন্ন অমিল দেখা যায়। তাই ১৯৫২
সালে বিশ্ববিখ্যাত জ্যোতিঃ পদার্থবিদ ড. মেঘনাদ সাহা এই বর্ষপঞ্জির আমূল সংস্কার করেন।
সেই অনুসারে প্রতিবছর ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ হওয়ার কথা। ড. মেঘনাদ সাহাকে সমর্থন করেন
ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহিদুল্লাহ। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের
সনাতনপন্থীরা তার প্রস্তাব গ্রহণ না করায় তারা আগের নিয়মই মেনে চলেন। ফলে এখানে হয়েছে
নতুন পঞ্জিকা, যা পশ্চিমবঙ্গের পঞ্জিকা থেকে একদিন এগিয়ে আছে বলেই “দুই বাংলার দুই
বৈশাখ” পালন করা হয়।
No comments